বীত
অনেকদিন পর নানুকে স্বপ্নে দেখলাম। প্রায় সাড়ে ছয় বছর আগে যেই মানুষটা মারা গেছে—সে যখন স্বপ্নে আসে তখন ব্যাপারটা খুব স্বাভাবিক মনে হয়। আমার কাছেও মনে হল। খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে নানুর সাথে গল্প করলাম। ঘুম ভাঙার কিছুক্ষণ পর মনে পড়ল, নানু আসলে নেই। নানাভাই চলে গিয়েছিল এক বেলার নোটিশে। দুপুরে স্ট্রোক করল, বিকালের দিকেই সব শেষ। নানাভাই মারা যাওয়ার পর কে যেন নানুকে বলছিল, 'বুড়োটা তো ফাঁকি দিয়ে চলে গেল, তুই আবার ওভাবে যাস না!' (নানুবাড়ির ওদিকে কাছের মানুষজনকে তুই করে বলার রীতি ছিল। আম্মুও প্রায়ই আদর করে নানুকে তুই বলে ডাকতো। নানাভাইকে অবশ্য আপনি বলেই ডাকতো—যদ্দূর মনে পড়ছে।) নানুকে ফাঁকি দিয়ে যেতে নিষেধ করা হল, নানুই উল্টো বড় ফাঁকি দিল। এক রাতে খেয়েদেয়ে ঘুমাতে গেল, সকালে আর উঠলো না। রাতেরবেলা আমরা কেউ না কেউ নানুর সাথে ঘুমাতাম। যদি হঠাৎ কিছু দরকার হয়। সাধারণত সুপ্তিই ঘুমাত নানুর সাথে। সে রাতেও ঘুমিয়েছিল। বেচারা তখন অনেক ছোট তো, সকালে উঠে কিছু বুঝতে পারেনি। সে দেখে, নানু ঘুম থেকে উঠছে না, হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। তার মনে হল, নানুর খুব ঠাণ্ডা লাগছে। গায়ে একটা কাঁথা টেনে দিয়ে সে...