পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

এলোকথন (অশ্বিনী ২৪:১)

ছবি
এক. আমার একটা ফ্যান্টাসি আছে। আমি মানুষজনকে পকেটে করে ঘুরি। মানে, আক্ষরিক অর্থে তো আর একটা মানুষকে পকেটে পুরে ফেলা যায় না, তবে কেউ যখন ফোনে খুদেবার্তা/মেইল দেয়, সেটা না পড়েই পকেটে নিয়ে ঘুরতে থাকি। ধর, সকালবেলা এ্যানি একটা মেইল দিল। ফোনের পর্দায় ওর একটা ছবি আসবে, মেইলের খানিকটা অংশ আসবে। আমি মেইলটা আর খুলি না, ওভাবেই ভার্সিটি চলে যাই। দু-এক ক্লাস পরে হয়তো কোন কাজে ফোনটা পকেট থেকে বের করি। আবার এ্যানির মুখ দেখা যায়, সেটাকে আনমনে একটু ঝাড়ি দিয়ে আবার পকেটে রেখে দেই। দুপুরে খাবার সময় হয়তো অকারণেই ফোনটা বের করি, এবং আবার অবাক হয়ে যাই, আরে, এ যে এ্যানির মুখ দেখা যাচ্ছে, মেইল এসেছে। আবার ফোনটা পকেটে রেখে দেই, মেইল না খুলেই। সে নাহয় খোলা যাবে এক সময়—অত তাড়াহুড়োর কী আছে। গত দুদিন ধরে রিয়াকে পকেটে নিয়ে ঘুরছি। এই উত্তর দিবো-দিবো করে খেয়াল করলাম, এখনও দেইনি। থাকগে। তাড়াহুড়োর তো কিছু নেই, একসময় ফোন দিয়ে বকে দিলেই হয়ে যাবে। অবশ্য, ছেলেদের সাথে এই ফ্যান্টাসিটুকু করা কঠিন। মেইল দেয়ার সাথে সাথে উত্তর না পেলে আরিফ-আকিবের মাথা এলোমেলো হয়ে যায়, বুক ধড়ফড় করতে থাকে। পানির পিপাসা পায়। মনে হয়,

এলোকথন (ভাদ্রপদ ২)

ছবি
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মানুষের সাথে আকাশের একটা সম্পর্ক আছে। সারা দুপুর বসার ঘরে কাজ করছিলাম। যেই ঘরের জানালাটা বহুকাল আগে মরে গেছে, খালা হয়তো মাসে একবার সবাইকে মনে করানোর চেষ্টা করে, জানালা মরে নাই, খালার অসামান্য চেষ্টার পর ফাঁকফোঁকর দিয়ে সামান্য একটু আলো ঢোকে, সেই আলোতে ঘর আলো হয় না, বরং অন্ধকারের কথাটাই নতুন করে মনে পড়ে যায়, খালা জোর গলায় দাবি করে, দু হাত তুলে চিৎকার করে, জানালা মরে নাই, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না, যে জানালা দিয়ে অন্ধকার আসে, সেটা আমার কাছে মরে গেছে, সেই বছর উনিশ আগে, সেই উনিশ বছর আগে যখন আপুর সাথে এই বাসায় ঢুকেছিলাম, তখন থেকেই… এইসব জানালা, ওরাও তো প্রতীকী বটে, কেন বসার ঘরের জানালাটাই অকালে মরে যাবে, কেনই বা আমার ঘরের জানালাটা অকালে বেঁচে থাকবে, জ্যান্ত জানালা, মৃত জানালা, সবাই মিলে আমার চিন্তাকে আক্রমণ করবে, বারবার করে বলবে, ওরাও নাকি প্রতীক, কী যেন ছাই, মেটাফোর, জানালাগুলো একেকটা মেটাফোর, শিকলদেবীর পূজার বেদী ভাঙতে আলোটুকু তো লাগবেই, ও-ঘরে দেবী জন্ম নেবে, আমার ঘরে এসে অপঘাতে মরে যাবে… কাজেই, চৌকো জানালার বাইরে যে চৌকো আকাশ, সেই আকাশের সাথে আমাদের সম্পর্ক

এলোকথন (ভাদ্রপদ ১)

ছবি
গোল্লায় যাক সব কাজকর্ম! এই কাজগুলোকে আকিব ঠাট্টা করে ‘বানাবিস’—বা এমন কোনো একটা নামে ডাকে। তা, দিনরাত ‘বানাবিস’-এর কাজ করলে মাথা গরম হবে না কেন। ওহ, মাথাটা যেন বনবন করে ঘুরছে, ভীষ্মলোচন শর্মা গান গেলে বোধ করি এমনটাই হত। আজ রাতের মত কাজকর্মকে গোল্লায় যেতে বলার কারণটা ছোট এবং খানিকটা অদ্ভুত। ঘরের সাদা দেয়ালের দিকে তাকিয়ে হঠাতই একটা পুরনো গান মনে পড়ে গেল। আম্মু ছোটবেলায় অনেক গান শুনতো। মানে, আমি যখন ছোট, তখন। আমাদের বাসায় একটা উদ্ভট যন্ত্র ছিল। বিশাল দেহ, আর দুপাশে দুটো বিশাল সাউন্ডবক্স। রেডিও থেকে শুরু করে ক্যাসেট—সবই শোনা যেত সেটাতে। আমার সকালে ঘুম ভাঙতো ওটার রেডিও শুনে। আব্বু সকাল সাতটায় বিবিসি বাংলার খবর শুনতো। খবরগুলো তো মনে নেই, তবে প্রতিটা খবরের মাঝে ছোট্ট একটা সলো বাজতো—বেশ মনে আছে! আর সন্ধ্যেবেলা আম্মু ওখানে ক্যাসেট বাজিয়ে গান শুনতো। খুব সুন্দর কিছু ক্যাসেট ছিল আমাদের—ওসব কোথায় যে গেছে, কে জানে। আমার ছোটবেলার যত স্মৃতি মনে পড়ে, তার অর্ধেকেই আম্মু গান গাচ্ছে বা শুনছে—এমন একটা দৃশ্য চোখে ভাসে। আম্মু গানটান কখনো শিখেছে বলে জানি না, তবে গুনগুন করে যখন গাইতো, শুনতে ব

বৃত্তের ভেতরে

ছবি
“কোথাও নেই ঝুম ঝুম অন্ধকার, তক্ষক ডাকা নিশুতি রূপকথা শুনে শিউরে ওঠে না গা স্বপ্নে আমার শরীরে কেউ ছড়ায় না শিউলী ফুল আলোর আকাশ নুয়ে এসে ছোঁয় না কপাল; গোটা শহর বাতি জ্বেলে সতর্ক পায়ে পায়ে হারাবার জায়গা খুঁজে মরি…” আচ্ছা, এই শহরে কি হারানোর জায়গার সত্যিই অভাব? বেশ কিছুদিন হল, অলিগলিতে ঘুরতে ঘুরতে আমি হারিয়ে গেছি। এবং অবিশ্বাস্য লাগতে পারে, রাস্তা পাওয়ারও চেষ্টা করছি না আমি। কারণ আমার দৃঢ় বিশ্বাস, হারিয়ে যাওয়াই বরং কঠিন, আমি রাস্তা খুঁজে না পেলেও রাস্তা ঠিকই আমাকে খুঁজে নেবে। কাজেই সোডিয়াম আলোকে আড়ালে রেখে, একটা অন্ধকার গলিতে চুপ করে বসে আছি। মানুষের কণ্ঠ কানে এলে পালিয়ে অন্য একটা গলিতে ঢুকে পড়ছি। জানি, এভাবে খুব বেশিদিন চলবে না। কারো না কারো হাতে তো ধরা পড়তেই হবে, প্রজ্ঞা তো তাই বলে। দু-চারদিন আগে রিয়ার ব্লগে ঢুকে দেখি, পুঁচকে মেয়েটার বেশ উন্নতি হয়েছে। এদ্দিন আমিই কেবল একচেটিয়া নিষেধাজ্ঞা জারি করে যেতাম, আজকাল মেয়েটা উল্টো আমার জন্য লেখা নিষিদ্ধ করতে শুরু করেছে। কী আর করা। চোখ বড় বড় করে কিছুক্ষণ শিরোনামটা দেখে চলে এলাম। “বৃত্তের বাইরে”। মনে মনে বললাম, স