পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০১৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

এলোকথন (অশ্বিনী ১)

মানুষজন এবার নির্ঘাৎ আমাকে মার দিবে। কয়েকদিন থেকে একই কথা শুনতে শুনতে সবার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু  এটা সত্যি যে, আমার জানালা দিয়ে কখনই জোছনা ঢুকে না। আমি ঈর্ষা নিয়ে, প্রবল ঈর্ষা নিয়ে পঞ্চাশ হাত সামনে থাকা বাড়িটাকে দেখি, বাড়ির বাসিন্দাগুলোকে দেখি। নিতান্ত মেঘ যদি বিশ্বাসঘাতকতা না করে, তারা প্রতিটা চাঁদের আলো স্পর্শ করতে পারে। মাত্র দাঁড়াতে শেখা বাচ্চাটা জানালার গ্রিল ধরে জোছনা দেখে। নিজের সবকয়টা স্বপ্ন কবর দিয়ে করে আসা প্রৌঢ় লোকটা বারান্দায় এসে থমকে যায়। অষ্টাদশী মেয়েটা শীতের রাতে একটা চাদর জড়িয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকে। ঐ বাড়ির ইঁদুরটা জোছনা দেখে, যেই তেলাপোকাটা দুদিন পরে স্যান্ডেলের নিচে চাপা পড়ে মরে যাবে, সেও জোছনা দেখে। চাঁদের আলোয় অদ্ভুত সব বিভ্রম হয়। কফিকে অ্যাবসিন্থ মনে হয়, আর মেয়েটাকে প্লিয়েডেসদের একজন মনে হয়। সাদাকালো বাড়িটার দিকে আমি তীব্র ঈর্ষা নিয়ে তাকিয়ে থাকি।

আমি

ছবি
বিশ বছর বয়সের একটা ছেলেকে কী বলা যায়? অবশ্যই পিচ্চি না। এবং কোনোভাবেই বৃদ্ধ না। আমি মাঝামাঝি কিছু একটা। একটা সময় মোটামুটি স্বাভাবিক ছেলে ছিলাম। প্রায় বছরখানেক হল, আমার মাথায় অদ্ভুত কিছু সমস্যা দেখা দিসে। যেসব সমস্যা থাকলে বিশ বছরের একটা ছেলেকে পাগল বলে ডাকা যায়— সেসব সমস্যা আমার ব্রেনের অলিতেগলিতে, নিউরনের ঘুপচিতে বাস করে। একসময় অবশ্য স্বাভাবিক ছিলাম। এখন বুঝতেসি, মানুষ পাল্টায়। আমি নিজেই সারাজীবনে কয়েক দফা পাল্টাইসি। শেষবার পাল্টানো শুরু হইসিল এরকম কোনো একটা সময়। আশ্বিনের প্রথম দিকে। নিতান্তই হঠাৎ করে, একদিন বসে বসে পড়তেসিলাম, হঠাৎ মনে হল—আমার এখন হুমায়ূন আহমেদের একটা ছবি আঁকা লাগবে। সাথে সাথে পেনসিল নিয়ে বসে গেলাম....এবং ছবি আঁকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। কিন্তু নেশাটা ধরে গেল। এরপর একটা বছর গেসে, আর আমি বহুদিন, বহুরাত এ্যামনে পার করসি। সামনে একটা সাদা কাগজ। হাতে কার্বনের টুকরা। এইসব এখন না বলি। আমি গরু, যথেষ্ট আগ্রহ নিয়েই ঘাস খাই, কিন্তু সেটাই হয়তো আমার একমাত্র পরিচয় না। কিংবা, খ্যাপার স্বভাবই হচ্ছে পরশপাথর খুঁজে ফেরা, কিন্তু তার জীবনেও একটা গল্প আছে, কেউ হয়তো ওট

তামান্না, তোমার জন্য

আমি রিকশা দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন রাস্তার পাশে একটা ছেলে হাঁটতেসিল। ছেলেটার বয়স বেশি না, এই...এইট নাইনে পড়ে হয়তোবা। চশমা পরা, বেশ বুদ্ধিজীবী-বুদ্ধিজীবী চেহারা। ছেলেটার সাথে সম্ভবত তার মা ছিলো ওটা। বেশ চমৎকার একটা দৃশ্য, খালি একটাই সমস্যা। ছেলেটার দুই হাতের কোনোটাই নাই। নাই বলতে, একেবারেই নাই, ঘাড় থেকেই দুই হাত নাই। আমি ক্যান যেন সেইটা দেখে বড় ধরনের একটা ধাক্কা খাইলাম। অনেকদিন আগের কথা...কিন্তু আমি এখনো ব্যাপারটা ঠিক নিতে পারি না...। মানে, ক্যামনে পসিবল...ছেলেটার প্রায় প্রত্যেকটা কাজ কাউকে করে দেয়া লাগবে...খাওয়ায় দেয়া লাগবে, জামা পরায় দেয়া লাগবে...এখন হিসাব করি, ছেলেটা যদি ৬০ বছর বাঁচে, ৬০টা বছরই সে এ্যামনে কাটাবে?? সে কখনো কোনো বন্ধুর কাঁধে হাত রেখে হাঁটবে না?? খেপে গেলে হাত দিয়ে টেবিলে থাবড়া দিবে না?? গিটার বাজানোর শখ হলে গিটার ধরতে পারবে না?? আমাদের দুঃখগুলো আসলে নিতান্তই ছোট। অমুক ছেলেটা বা অমুক মেয়েটা আমার সাথে বিট্রে করসে। এই নিয়ে দুঃখ। রেজাল্ট খারাপ হইসে, বাসায় আম্মা ফায়ার হয়ে গেসে। এই নিয়ে দুঃখ। ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাচ্ছি না। এই নিয়ে দুঃখ। এইসব আসলে কিচ্ছু না....নাথিং ম্যান,