পোস্টগুলি

মে, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বীত

ছবি
অনেকদিন পর নানুকে স্বপ্নে দেখলাম। প্রায় সাড়ে ছয় বছর আগে যেই মানুষটা মারা গেছে—সে যখন স্বপ্নে আসে তখন ব্যাপারটা খুব স্বাভাবিক মনে হয়। আমার কাছেও মনে হল। খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে নানুর সাথে গল্প করলাম। ঘুম ভাঙার কিছুক্ষণ পর মনে পড়ল, নানু আসলে নেই। নানাভাই চলে গিয়েছিল এক বেলার নোটিশে। দুপুরে স্ট্রোক করল, বিকালের দিকেই সব শেষ। নানাভাই মারা যাওয়ার পর কে যেন নানুকে বলছিল, 'বুড়োটা তো ফাঁকি দিয়ে চলে গেল, তুই আবার ওভাবে যাস না!' (নানুবাড়ির ওদিকে কাছের মানুষজনকে তুই করে বলার রীতি ছিল। আম্মুও প্রায়ই আদর করে নানুকে তুই বলে ডাকতো। নানাভাইকে অবশ্য আপনি বলেই ডাকতো—যদ্দূর মনে পড়ছে।) নানুকে ফাঁকি দিয়ে যেতে নিষেধ করা হল, নানুই উল্টো বড় ফাঁকি দিল। এক রাতে খেয়েদেয়ে ঘুমাতে গেল, সকালে আর উঠলো না। রাতেরবেলা আমরা কেউ না কেউ নানুর সাথে ঘুমাতাম। যদি হঠাৎ কিছু দরকার হয়। সাধারণত সুপ্তিই ঘুমাত নানুর সাথে। সে রাতেও ঘুমিয়েছিল। বেচারা তখন অনেক ছোট তো, সকালে উঠে কিছু বুঝতে পারেনি। সে দেখে, নানু ঘুম থেকে উঠছে না, হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। তার মনে হল, নানুর খুব ঠাণ্ডা লাগছে। গায়ে একটা কাঁথা টেনে দিয়ে সে

এলোকথন (বিশাখা ১)

ছবি
[ আবারও নিষিদ্ধ! আরামবাগ-জিগাতলা-ময়মনসিংহের জন্য। পরীক্ষা শেষ কর আগে। গাধা।] ইদানিং কী হয়েছে জানি না, যা মনে আসছে তাই লিখে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে। যা ইচ্ছে তাই লিখে ফেলা কোন কাজের কথা না, আনিসুল হকের মত একজন মানুষ এই করতে করতেই বখে গেলেন। অবশ্য, আমি যাচ্ছেতাই লিখলে বড় কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। আনিসুল হকের লেখার অর্থ বাংলা সাহিত্য। হেলাল হাফিজের লেখার অর্থ বাংলা কাব্য। ওনারা যা মনে আসে তাই ছাপিয়ে দিলে এই ভাষার গায়ে কালিমা লাগে। আমি নিতান্ত খেলো একজন মানুষ​—এই যুক্তিতে আমি যাচ্ছেতাই লিখে যাই। এবং ইফরীতের ভাষায়, "নোবেলের সেসব লেখা তার ব্লগে ছাপাও হয়ে যায়"। আচ্ছা হোক। তাতে খুব বেশি ক্ষতি নেই বুঝিবা। খুব, খুব অদ্ভুত, একটু আগে বাসার সামনের রাস্তাটা ধরে হাঁটছিলাম। কিছুদূর আগানোর পরেই মাথা এলোমেলো হয়ে গেল​—সারা রাস্তা জুড়ে খুব চেনা একটা ঘ্রাণ। ঘ্রাণটা চেনা, কারণ আমি প্রতিবার দাদুবাড়ি গেলে এই গন্ধটা পাই। পুরো ঠাকুরগাঁও শহরজুড়েই আমি আলাদা আলাদাভাবে এটা পাই। পোড়াকাঠের ঘ্রাণ থেকে শুরু করে মুদির দোকানের ঘ্রাণ — সবকিছুই আমাকে সেই ফেলে আসা শহরটার কথা মনে করিয়ে দিল। এবং কয়ে

তোমরা

ছবি
জানালা দিয়ে বৃষ্টির ঝাপটা আসছে। শুধু ঝাপটা আসছে বললে ভুল বলা হবে, বৃষ্টির বড় বড় ফোঁটা জানালা দিয়ে ঢুকছে। ইচ্ছে করেই জানালাটা খুলে রেখেছি, কারণ খানিক্ষণ আগে আমার মাথায় দেবব্রত বিশ্বাস ঢুকে গেছে। ভাঙা রেকর্ডের মত একটা কথা মাথায় বাজছে। সকাল থেকে টানা জাভা দিয়ে একটা ফাইল এক্সপ্লোরার বানানোর চেষ্টা করছিলাম। দীর্ঘক্ষণ কোডের দিকে তাকিয়ে মাথাটা এখন আর কাজ করছে না। অথবা, মাথাটা আর চাপ নিতে চাচ্ছে না—সেই বেচারারও তো একটা সহ্যসীমা আছে। আমার পুরো চিন্তাভাবনায় এখন অন্যকিছু নেচে বেড়াচ্ছে। জানি না কেন, প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে বারবার চোখে পানি আসছে। এই কিছুদিন আগেও নওশীনকে বলছিলাম, একুশ বছরের একটা মানুষ কথায় কথায় ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলতে পারে না। কাজেই কত এক ঘন্টা ধরে যা ঘটছে, তাতে আমার বিব্রত হওয়া উচিত ছিল। আমার বিব্রত লাগছে না। ভালো লাগছে কেন যেন। সপ্তাহখানেক আগে একজন বলছিল, সে প্রবল বৃষ্টির মাঝে দাঁড়িয়ে ভেউ ভেউ করে কাঁদবে। আমাকেও তার পাশে দাঁড়িয়ে ভেউ ভেউ করতে হবে। সেই মুহূর্তে ব্যাপারটা অনেক হাস্যকর মনে হয়েছিল, ঝাড়ি দিয়েছিলাম মেয়েটাকে। আজ রাত নয়টা সাতান্ন মিনিটে প্রস্তাবটা আর হাস্যকর লাগছে