পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

যাকে আমি মেইল দেই না

ছবি
​​প্রিয় "ইয়ে", সম্বোধনটা যথেষ্ট গুরুতর হয়ে গেছে রে। "ইয়ে" বলে কাউকে ডাকাটা খুবই ইয়ে দেখায়। কিন্তু তোর নামটা না লিখে কী যে লেখা যায়—সেটা ভেবে পেলাম না। বল তো কী লেখা যায়? ​​ আমার সম্বোধনের মত তোর অভিযোগটাও গুরুতর, আমি আর মেইল দেই না। অভিযোগটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই, কারণ সেটা একশোভাগ সত্যি। মেইল দেয়ার প্রয়োজন ফুরিয়েছে না? আমরা আবারও সস্তা হয়ে যাওয়া শুরু করেছি। তুই একটুখানি, আর আমি অনেকখানি। আমি কিন্তু পারলে ফেসবুকটা বন্ধ করে দিতাম। আবারও মেইল-মেইল আর ফোন-ফোন খেলতাম। মাসকয়েক আগের ঐ দিনগুলো কী চমৎকার ছিল, জানিস? হাতে​​গোণা পাঁচ-সাতজনের সাথেই কথা হত কেবল। কিন্তু যাদের সাথে হত, একদম একশোভাগ খাঁটি কথা হত। মানে, অদ্ভুত ব্যাপারস্যাপার ছিল​​—​মনে কর, ​​অর্ণবের সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই, এবং নেই মানে একেবারেই নেই, শূন্য। আর পদ্মর সাথে যোগাযোগ আছে—সেটার ​অর্থ হল, ​কয়েকদিন পরপর​ বাসায়​ বসে​ আড্ডা, আর কয়েকবার করে ফোনে​ চেঁচামেচি।  প​দ্মদের বাসায় কতদিন যাই না জানিস? আবার ফেসবুকটা বন্ধ করে দিতে পারলে ভালো হত কিন্তু। সবার কাছ থেকে পাওয়া ছোট ছোট চ্যাটের পর

এলোকথন (ফিরে আসা চৌদ্দ)

ছবি
“Lay her a-hold, a-hold! Set her two courses: off to sea again, lay her off.” মুশকিল, এই সময়ের বৃষ্টিটা বড় মুশকিলে ফেলে দিচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টিটা হয়েই যাচ্ছে। এই একটু আগে বিষম বেগে বৃষ্টি নামলো—পুরো পৃথিবীটা ভাসিয়ে নিয়ে যাবে যেন। আমার জন্য মুশকিল, কারণ বৃষ্টি হলে পড়াশোনা করতে ইচ্ছে হয় না। খুব, খুবই ইচ্ছে হয় লিখতে। অথচ একগাদা পড়া জমে আছে। নিলয়কে (আমাদের ক্লাসের নিলয়) কথা দিয়েছি, ঠিকমত পড়াশোনা করব। আগের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। চৌদ্দ সালে ঠিক এভাবেই বৃষ্টি হত। আমরা এইচএসসি দেই সে বছর। প্রত্যেকটা কথা যেন স্পষ্ট মনে পড়ে যাচ্ছে। ঠিক আমাদের প্র্যাকটিকাল পরীক্ষাটা শেষ হল, আর সেই বছরের বৃষ্টিটাও শুরু হল। এইচএসসির পরের সময়টুকু মানুষ একটা ঘোরের মধ্যে থাকে। এই যে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটা রেস, এই রেসটা মানুষকে অবিশ্বাস্য একটা ঘোরের জগতে নিয়ে যায়। আমরা সেই ঘোরের মধ্যে বাস করতাম। আহা! সেই দিনগুলো! মানে, কল্পনার বাইরে একেকটা দিন গেছে। তখন ছবিটবি আঁকতাম না, কিছুই করতাম না। শুধু পড়তাম, মন ভালো থাকলে পড়তাম, আর মন খারাপ থাকলে…হুম, তখনও পড়তাম। আর বৃষ্টি হত বাইরে। জানা

এলোকথন (বিরলের ডায়েরি)

ছবি
[এলোকথন অর্থ কী? সম্ভবত, এলোমেলো কথাবার্তা। এই কথাগুলো কেবল নিজের ডায়েরিতেই লেখা উচিত, এর বাইরে না। তবে ভরসা এই যে, যেসব লেখা আমার নিজের জন্য, সেখানে আরও কয়েকজন মানুষের দাবি আছে।] ১৫ এপ্রিল, শনিবার বিকাল ৫:৩৭ ঘুমাইনি। ভাগ্যিস ঘুমাইনি! অথচ জেগে থাকার তেমন কোন কারণ ছিল না। সারারাত ট্রেনে এসে এবং সারাদিন ক্যাম্পে চেঁচামেচির পর একটা কথাই সত্য মনে হয়—ঘুম। সেই সাথে আজকে দিনাজপুরের আবহাওয়াটাও ঘুম ঘুম, চারিদিকে কেমন শান্তির একটা ভাব। সকালে অবশ্য ভালোই গরম ছিল। দুপুরে খাবার পর থেকে সবকিছু কেমন যেন দ্রুত পাল্টে যেতে শুরু করল। আমরা যখন সায়েন্টিফিক পেপারের লেকচারটা দিতে শুরু করেছি, আকাশটা একটু একটু করে কালো হচ্ছে। ঝড় আসার ঠিক আগে আগে বিদ্যুৎ চলে গেল, আর চারপাশ এমনই অন্ধকার হয়ে গেল, ক্লাসরুমে আর কাউকেই দেখা যায় না। খারাপ লাগছিল না ওভাবে ক্লাস নিতে। কারই বা খারাপ লাগে ওসব মুহূর্তে? ওদিকে বৃষ্টির ঝাপটা আসছে, আমি একবার করে ক্লাসের বাইরে যাচ্ছি, ফিরে এসে আবিরের কাছ থেকে ফ্লোর নিচ্ছি, তখন আবার আবির ক্লাসের বাইরে যাচ্ছে! Alternating lecture. পরে ঝড়টা যখন মোটামুটি প্রলয়ের র

পেন্সিল

ছবি
এক. অরিত্র যখন তার ডিপার্টমেন্টের সিঁড়িতে এসে দাঁড়াল, তখন বিকেল প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। শেষ বিকেলে কার্জন হলে অসংখ্য ছেলেমেয়ে থাকার কথা। সত্যি বলতে কী, ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ তারিখে একটু বেশিই থাকার কথা। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রির সামনের রাস্তাটা পুরো ফাঁকা। অরিত্র একটু ভুরু কুঁচকে তাকাল। পৃথিবীর প্রচলিত নিয়মকানুনে তার কোন আস্থা নেই, কিন্তু নিয়মের বাইরে কিছু দেখলে একটু অস্বস্তি লাগে। সোমলতা এখনো আসেনি, সেটা নিয়েও একটু অস্বস্তি লাগছে। পকেট থেকে ফোনটা বের করে সময় দেখা যায়, কিন্তু বের করতে ইচ্ছে করছে না। সময়টা না দেখেও বলা যায়, এতক্ষণে সোমলতার চলে আসার কথা। সোমলতার সাথে দেখা হওয়ার আগের কিছুক্ষণ অরিত্র একটু অস্থিরতায় ভোগে। এই অস্থিরতা কীসের জন্য, সে নিজেও জানে না। যেই মানুষটার সাথে প্রতিদিন দু-তিনবার দেখা হয়, না চাইলেও জহিরের ক্যান্টিনে, পুকুরপাড়ে, কিংবা কার্জনের গেটে যার সাথে দেখা হতে বাধ্য, সেই মানুষটাকে ফোন দিয়ে ডেকে আনলে কেন এত অস্থির লাগে, অরিত্র ব্যাখ্যা করতে পারে না। ডিপার্টমেন্টের দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে অরিত্র সামনে তাকাল, এবং হঠাৎ করেই মুগ্ধ হল! এতক্ষণ এই দৃ