পোস্টগুলি

নভেম্বর, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

চেঁচামেচি দিবস

ছবি
অনেক অনেককাল আগে, একটা সুন্দর দিন ছিল। যেদিন কিছু হয়নি। যেদিন কেউ জানত না যে, দিনটা সুন্দর ছিল। অথচ দিনটা সুন্দর ছিল। অনেক অনেককাল আগে, এক বিকেলে আমি বসে ছিলাম। এমনিই বসে ছিলাম। সেই বিকেলে কিছু হয়নি। কিছু যে হয়নি তার প্রমাণ, সেই বিকেলের কথা কেউ জানে না। অসংখ্য শব্দেভর্তি আমার ডায়েরিটাও তার খোঁজ জানে না। বিকেলটা সুন্দর ছিল। আজ থেকে অন্তত এক কোটি বছর আগে, অচেনা নম্বর থেকে একটা ফোন এসেছিল। এমনিই ফোন এসেছিল, কোন কারণ ছিল না। কারণ যে ছিল না তার প্রমাণ, সেই যদি ফোন আমি না ধরতাম, তবে গোটা জীবনে দ্বিতীয়বার আর সেই ফোন আসত না। তাতে কিছু এসে যেত না, কারণ আমি কখনই জানতে পারতাম না সেই ফোনের কথা—যেটা জীবনে একবার আসে। কিছু এসে যেত না বটে। যেই মানুষটা সারাটা জীবন একটা অন্ধকার ঘরে কাটিয়ে দেয়, সে নিশ্চয়ই আলোর অভাবে হাঁসফাঁস করে মরবে না? সুতরাং, স্পষ্টতই আমি বেঁচে থাকতাম। জোর গলায় ঘোষণা দিতাম, আমি পৃথিবীর স্পর্শ চিনি। এবং প্রাণভরে শব্দগুলো শুনতাম। বলতাম, they slither while they pass, they slip away across the universe. অথচ আমি জানতে পারতাম না—ইউনিভার্স দেখা আমার বাকিই রয়ে গে

অন্তর্গত বিস্ময় – ২

ছবি
“God is a concept—by which we measure our pain.” কথাটা জন লেনন বলেছিলেন, কোন এক গানে। থুড়ি, ঠিক ‘কোন এক গানে’ বলাটাও ঠিক হচ্ছে না, কারণ এটা যথেষ্ট বিখ্যাত একটা গান। সত্যি বলতে কী, এই গানের কথা যে আমি কতবার করে মানুষজনকে বলেছি, বলতে বলতে নিজেই আশ্চর্য হয়ে গেছি—কতবার এমন হয়েছে—আমি নিজেও জানি না। এবং ঠিক এই কথাটাই আমার লেখার কথা সপ্তাহদুয়েক আগে। আবারও রিয়ার বকা খেয়ে লিখতে বসলাম—এদ্দিন বাদে। ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত, কারণ যুক্তি বলে, রিয়ার বকায় কাজ হওয়ার কথা না। বিশেষ করে, নভেম্বরের এই ভুতুড়ে রাতে কোনক্রমেই হওয়ার কথা না। তবে কিনা, যুক্তির উপরে আরও কিছু একটা বাস করে, কাজেই যখন লিখতে বসার কথা না—ঠিক তখনই আমার মনে হয়, ঠিক সেই মুহূর্তেই আমার মনে পড়ে আরিফের অমর উক্তি—‘দামি লেখা পড়তে গেলে আমি নিশ্চয়ই পাবলিক লাইব্রেরিতেই যেতাম? আপনার কাছে সস্তা লেখাই পড়তে চাইসি, সুতরাং প্লিজ, লেখেন।’ আমি যে একেবারেই লিখছি না—ব্যাপারটা এমনও না। বছরের মাঝখানে ডায়েরি লেখা প্রায় ছেড়ে দিয়েও এই বছর প্রায় বিয়াল্লিশ হাজার শব্দের ডায়েরি লিখে ফেলেছি, ডিসেম্বর শেষ হতে হতে বোধকরি তা পঞ্চাশে গিয়েই ঠেকবে—এটাই

অন্তর্গত বিস্ময় – ১

ছবি
এক. হতে পারে, নভেম্বরের এই সময়টা মানুষের মধ্যে খানিকটা হলেও সাইকিডেলিয়া এনে দেয়। অবশ্য, ‘সাইকিডেলিয়া’ শব্দটা বলা বোধহয় ঠিক হচ্ছে না, এটা অর্থ অনেকভাবেই করা যায়। এর চেয়ে অনুভূতিটাকে ‘পরাবাস্তব’ ডাকলেই বরং ভালো শোনায়। হেমন্তকাল না এটা? হেমন্তে যেই রহস্যময়তা আছে, এবং যেই রহস্যটুকু আছে হেমন্তকে পুনর্জন্ম দেয়া কবির ভেতরে—সেই রহস্য সম্ভবত আর কোথাও নেই। আমি মাঝেমধ্যেই ভাবি, জীবনানন্দ যদি এভাবে হেমন্তকে নতুন করে জন্ম দিয়ে না যেতেন, আমরা কীভাবে নিজেদেরকে ব্যাখ্যা করতাম? একটা ফর্সা চাদর, ফর্সা বিছানা, জানালার পাশের টেবিলটায় বসে, ঠিক রাত আটটায় দ্বাদশীর আলো দেখে যেই অনুভূতিটা হত—সেটার কারণ আমরা কীভাবে খুঁজে পেতাম? আমার ধারণা, আমরা বিভ্রান্ত হয়ে যেতাম, স্ট্যাটের মাঠে দিশেহারা হয়ে বসে থাকতাম, আমাদের হাত-পা কাঁপতে থাকত, আরও একবার মহাখালী থেকে বাসে উঠতে গিয়ে আমরা কেবল শূন্যতাই দেখতাম (অর্থাৎ ঢেউটুকু দেখতাম না)। এবং তিনি ছিলেন। তিনি ছিলেন, তাঁর ট্রাঙ্কটুকু ছিল—বড় সৌভাগ্য আমাদের—হেমন্তের মধ্যিখানে এসে আমরা আবিষ্কার করতে পারি যে, “জানি—তবু জানি নারীর হৃদয়—প্রেম—শি

এ্যালানার গল্প এবং একটুখানি বরিশাল

ছবি
আমার সমবয়সী বন্ধুদের মধ্যে কেমন যেন একটা অভিভাবক-টাইপ ভাব থাকে। অবশ্য, সমবয়সী বা আছে ক’জন। আঙুলে গুণে ফেলা যাবে, এবং সেটা হাতের আঙুল ছাড়িয়ে পা পর্যন্ত যাওয়ার কথা না। তাদের একজনের নাম এ্যালানা। এবার বরিশালে গিয়ে এ্যালানার সাথে দেখা করেছিলাম, অনেকদিন পর। এবং কোন এক অদ্ভুত কারণে, বরিশালের গল্প অনেকের কাছে করলেও এ্যালানা মেয়েটার প্রসঙ্গ আসেনি। ঘুরেফিরে আমরা বরিশালের স্কুলগুলো, সেখান থেকে কীর্তনখোলা, সেখান থেকে আবারও বরিশালের রাস্তা—এই গল্পগুলোতেই ফিরে এসেছি, কিন্তু এ্যালানার কথা বলার সময়টুকু হয়নি। আমার খুব ইচ্ছে ছিল, ওদের শহরে গিয়ে মেয়েটাকে ভড়কে দিব। কাজেই আগে থেকে কিছু বলিনি। ভুলেও যাচ্ছিলাম অবশ্য ওর কথা। আমরা যেই সকালে বরিশালের মাটিতে পা রাখলাম, সেদিন বড় বৃষ্টি হচ্ছিল। লঞ্চে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে ছিলাম সবাই। কাজকর্ম করছিলাম। আমার ইচ্ছে ছিল আরেকটু কাজ করানোর, কিন্তু রাত তিনটার দিকে বাকি তিনজন বিদ্রোহ ঘোষণা করল। এখন নাকি এক কাপ চা না হলে কোনভাবেই চলছে না। কাজেই আমরা কেবিন ছেড়ে বাইরে বের হলাম, এবং আবিষ্কার করলাম মোটামুটি সারা লঞ্চ চুপচাপ, শান্ত, সবাই গভীর ঘুমে। কাজেই চ