অবশ আকাশ

গত রাতে আমার মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা ভর করেছিল।

I thought a lot about life and death.

খলিল নানাভাইয়ের কথা আমার মনে পড়ে। ফুলবাড়ির গ্রামে ওনাকে শেষবারের মত যখন দেখি—তখন বিকেল প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। উঠানের উল্টো দিকে গোয়ালঘর ছিলো, ঠিক সেই গোয়ালঘরের মাথায় সন্ধ্যা নামতো। প্রথমে এক টুকরো ঘন অন্ধকার দেখা যেতো, এরপর সারা আকাশ ঐ অন্ধকারে ঢাকা পড়তো।

বারান্দার কোণায় একটা খাটিয়ার ওপর খলিল নানাভাই বসে থাকতেন। সেই খাটিয়ায় বসে আমরা হিসাব করেছিলাম, কত বয়স হল ওনার। প্রায় আটানব্বই বছর হয়েছিল। একই বারান্দার একই কোণায়, একই খাটিয়ায় বসে বসে উনি আটানব্বই বছরের জীবন দর্শন করছিলেন।

ওনার চেহারা আমার মনে পড়ে না। তবু চোখের শূন্যদৃষ্টির কথা মনে পড়ে। দেখছেন, তবু দেখছেন না। অথবা সব দিকেই শুধু আকাশ দেখছেন, তাই বুঝি কেবল দূরে দূরে তাকাতে হয়।

Now, there’s a look in your eyes
Like blackhole in the sky
তোমার চোখে দূরের আকাশ মিশে থাকে
রূপক হয়ে, সিড ব্যারেট হয়ে।

আমার আকাশ দেখার কথা মনে পড়ে, আকাশ আমাকে পাগল করে দেয়। এইটুকু একটা মানুষ, এইটুকু একটা জায়গায় বসে চারিদিকে কেবল আকাশ দেখে, এইটুকু একটা মানুষ, চোখে ব্ল্যাকহোল নিয়ে বসে থাকে, চৌকো আকাশ, চৌকো আকাশকে পাগলের মত টানে,

এবং গত রাতে, আমি যখন কাঁথামুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ি, তার অনেক অনেক আগে আমার ভেতর এক ধরনের অস্থিরতা ভর করে,

I thought why should I live, why should I leave,

আর সেই মুহূর্তে জানলা দিয়ে সোঁদা ঘ্রাণ আসতে থাকে। আমি সবচেয়ে জোরে ফ্যান ছেড়ে দেই। ঘরটা তখন সমুদ্র হয়ে যায়। মশারি হয়ে যায় নৌকার পাল। সেই নৌকা একটু-অল্প দোলে।

নৌকার পিঠে শুয়ে আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি।

কাল সারারাত আমি আকাশ দেখেছি। দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে উঠে দেখি, তখনও আকাশ। পাশ ফিরে শুয়ে আছি, তবু সামনে আকাশ।