পোস্টগুলি

শহীদুলের ভাঙতি লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ডগ্গো‌

ছবি
লিনুর মধ্যে এই অপরাধবোধটা কাজ করে—কেননা সারা দুপুর ল্যাব করে বিকালবেলা তার ক্লান্ত লাগে, এবং সে টিএসসিতে যায় চা-বিস্কুট খেতে, তখন হয়তো একটা বাদামি কুকুর এসে ঘুরঘুর করে, বারবার লেজ নাড়ায়, মুখ তুলে লিনুর দিকে দেখে, ফলে লিনুর মনে হয় কুকুরটা হয়তো খাবারের ভাগ চায়, তখন সে প্রথমে হাসে, এরপর প্রশ্রয়ের ভঙ্গিতে বলে, দাঁড়া দিতেসি তোরে বিস্কুট—এবং এর ফলে যেই দুর্ঘটনাটা ঘটে—সেটার জন্য আজীবন লিনু নিজেকেই দায়ী করে, এবং তার মধ্যে এই অপরাধবোধটা কাজ করে যে, এক ক্লান্ত বিকালে সে একটা কুকুরকে বিস্কুট খাওয়ার জন্য দাঁড়াতে বলে। বস্তুত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা কেউই এই ঘটনার সাথে লিনুর সম্পৃক্ততার কথা স্মরণ করতে পারে না—কেননা যারা সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিল কিংবা ছিল না—তারা ঘটনার কার্যকারণের চেয়ে ফলাফল সংক্রান্ত আলোচনাতেই বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে। সেই বিকালে লিনু যখন এক হাতে চায়ের কাপ এবং অন্য হাতে বিস্কুট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, তখন বাদামি কুকুরটা এসে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আহ্লাদ প্রকাশ করে, এবং লিনু যখন বলে, দাঁড়া তোরে দিতেসি বিস্কুট—তখন কুকুরটা সামনের দুই পা তুলে আক্ষরিক অর্থেই দাঁড়িয়ে পড়ে। দু-একজন এই বিষয়টা ল...

আমাদের Die Verwandlung-এর ইতিহাস

ছবি
পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের লোকেরা সেই ভোরের কথা স্মরণ করে, যেদিন সকালে প্রথম রিকশার ক্রিরিং ক্রিরিং বেল শুনবার আগেই তারা কুত্তার ডাক শুনতে পায়, এবং পৃথিবীর সকল কুত্তার পূর্ববর্তী প্রজন্মের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করে তারা আবারও পাশ ফিরে শোয় এবং ঘুমিয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে ভোরবেলা কুত্তার এই ডাক এবং এর বিপরীতে নাজিমউদ্দিন রোডের লোকের প্রতিক্রিয়া যথাক্রমে নাজিমউদ্দিন রোডের লোক এবং কুত্তার কাছে স্বাভাবিকতম ঘটনা বলে মনে হয়, ফলে রাস্তা বরাবর কার্জন হলের দিকে কুত্তা দৌড়াতে থাকে, লেজ গুটিয়ে, জিহ্বা বের করে হাঁপাতে হাঁপাতে শহীদুল্লাহ হলের গেটে এসে খানিকক্ষণ বিভ্রান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, পা দিয়ে কান চুলকায়, এবং পরমুহূর্তেই ভেতরে ঢুকে পড়ে, পুকুরঘাটে যেতে যেতে তার গতি ধীর হয়ে আসে, কেননা এই সময়ে তার গত রাতের কথা মনে পড়ে, এবং ভোরবেলা উঠে আরিফুজ্জামান আরিফ নিজেকে বাদামি রঙের কুত্তা হিসেবে আবিষ্কার করে।  সেই সকালে যারা শহীদুল্লাহ হলের পুকুরঘাটে আরিফুজ্জামানকে বসে লেজ নাড়াতে দেখে তারা বিষয়টাকে গুরুত্ব না দিয়ে এড়িয়ে যায়, এবং পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা বলে, এমনটা যে ঘটবে তার...

আবু তালেবের উপাখ্যান

ছবি
আমরা পেছন ফিরে তাকাবো, এবং কে জানে, হয়তো ২৩ এপ্রিল, ১৬৮২-তেই আমাদের দৃষ্টি পড়বে।  আমরা দেখবো, বুড়িগঙ্গার পাড়ে বড়সড় কোনো অশ্বত্থ গাছের নিচে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। আমরা ধরে নিবো, তার নাম লাল মিয়া।  এপ্রিলের ঐ দিনটাতে হয়তো খুব একটা গরম থাকবে না। কারণ বিক্রমপুরের উপকণ্ঠে ঢাকা নামের এলাকাটাকে হয়তো আমরা জঙ্গলাকীর্ণই দেখবো, সে হয়তো অজস্র আমের মুকুলের ঘ্রাণে আর বুড়িগঙ্গার বয়ে আনা শীতল বাতাসে লাল মিয়ার পরানডা জুড়ায়ে দিবে।  তবু আমরা লাল মিয়াকে ঘামতে দেখবো। অকারণেই বারবার ধুতির খুঁট তুলে মুখ মুছতে দেখবো।  কাজেই আমরা অনুমান করবো, লাল মিয়া বড্ড চিন্তা করে। হ্যায় কী জানি ভাইবা ভাইবা চোখমুখ ঘামায়া ফালায়।  এবং আমরা ১৬৮২ সালের কোনো এক দিনে, হয়তো ১৫ মেই হবে সেটা, সেই দিনটার দিকে যখন দৃষ্টিপাত করবো, তখন বুড়িগঙ্গার তীরের অশ্বত্থ গাছের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা লাল মিয়ার দিকে আমাদের দৃষ্টি পড়বে, এবং আমরা অকারণেই তাকে ঘামতে দেখবো। আমরা কৌতূহলী হয়ে তার দিকে একটু এগিয়ে যাবো। আমরা বিড়বিড় করে তাকে বলতে শুনবো,  আবু তালেবের বাড়িত যামু  শাগ-ডাইল আর বিনুন খামু।...