ছাদ
এক. ফারহাদের বাসাটা তিনতলা। একতলাটা গত দু মাস ধরে ফাঁকা পড়ে আছে। আর দোতলায় গত বিশ বছর ধরে এক বুড়ো পড়ে আছে। রিটায়ার্ড বুড়ো। বিশ বছর আগে লোকটা যখন এই বাড়িতে উঠেছিল, তখনও নাকি এমনই বুড়ো-বুড়ো চেহারা ছিল। একহাতে ছেঁড়া সুটকেস, আর অন্য হাতে একটা ভাঙা গীটার নিয়ে উঠে এসেছিল এই বাড়িতে। তবে আশ্চর্য এই যে, গত বিশ বছরে কেউ এই বুড়োকে গীটার বাজাতে শোনেনি। বুড়ো চিৎকার করে বাড়িওয়ালার সাথে ঝগড়া করেছে, এলাকার ছোট বাচ্চাদের আদর করে চকলেট খাইয়েছে, রমজান মাসে সারারাত মসজিদে জেগে কেঁদেছে, শেষবিকেলে বাসার চারপাশে পায়চারী করেছে, কিন্তু কখনই তার গীটারটা বাজায়নি। অথবা, কেউ তাকে বাজাতে শোনেনি। ফারহার আম্মুর ধারণা, বুড়ো গীটার বাজাতে পারে না। কোথাও কুড়িয়ে পেয়েছে—তাই নিয়ে চলে এসেছে। চালচুলোহীন বুড়ো! ফারহার কেন যেন এটা বিশ্বাস হয় না। বুড়ো বড্ড গরীব—এটা ঠিক অবশ্য। তাই বলে খামোখা একটা ভাঙা গীটার নিয়ে বিশ বছর পার করে দিবে? সে মাঝেমধ্যেই ভাবে, একদিন সাহস করে বুড়োকে জিজ্ঞেস করবে, উনি গীটার বাজান না কেন। সাহস হয়ে ওঠে না। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় কখনো বুড়োর সাথে দেখা হয়ে যায়। বুড়ো গম্ভীর মুখে হুংকা...